মিয়ানমারের জনগণকে সুরক্ষা ও ফের নির্বাচনের আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং।

শনিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতীর উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সুরক্ষায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী পুরো জাতির সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করতে চায়। যে দাবিতে নৃশংস কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে, যার ফলে ‍দেশের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিনষ্ট হচ্ছে সেটা সঠিক দাবি নয়।

তবে কবে নাগাদ তিনি এই নির্বাচনের আয়োজন করবেন; তা নিশ্চিত করে বলেননি।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির বেআইনী কার্যকলাপের কারণে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে।

এদিকে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী শনিবার গুলি করে অন্তত ১৬ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে। স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে।

জান্তা সরকার বলছে, তারা জনগণকে সুরক্ষা ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে।

দেশটির জেনারেলরা যখন সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছে, তখনও বিক্ষোভ নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন গণতন্ত্রকামীরা। যদিও এর আগে তাদের পিঠে ও মাথায় গুলি করে হত্যার হুশিয়ারি করে দেওয়া হয়েছিল।

শনিবার বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়াসহ বিভিন্ন শহরে আটকদের মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।

জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী বিআরপিএইচের মুখপাত্র ডা. সাসা বলেন, আজকের দিনটি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জাজনক। তিন শতাধিক নিরাপরাধ মানুষকে হত্যার পর সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন জেনারেলরা।

ইয়াঙ্গুনের দালা উপশহরে পুলিশ স্টেশনের বাইরে বিক্ষোভে জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করে নিরাপত্তা বাহিনী।

ইনসেইন জেলা শহরে তিনজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে স্থানীয় অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলে খেলা এক তরুণও রয়েছেন। আর পূর্বের লাশিহো শহরে মারা গেছেন চারজন। ইয়াঙ্গুনের কাছে বাগোতেও আলাদা আলাদা চারটি ঘটনা ঘটেছে।

উত্তরপূর্বের হোপিন শহরে নিহত হয়েছেন এক বিক্ষোভকারী। রাজধানী নেপিডোতে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার পর ফের নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শীর্ষ জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র রক্ষায় পুরো জাতির সঙ্গে মিলে কাজ করতে চায় সেনাবাহিনী। দেশের জনগণকে রক্ষা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায় সেনাবাহিনী।